বাংলাদেশে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময় আইনজীবী বা পরিচিত কারো উপস্থিতির বিধান থাকলেও সেই নিয়মটি ‘মোটেও মানা হচ্ছে না’।
মাদারীপুরে একজন কলেজ শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্ত ব্যক্তি গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিম পুলিশের রিমান্ডে থাকা অবস্থায় কথিত ‘বন্দুক-যুদ্ধে’ নিহত হবার পর বিবিসি বাংলার সাথে এক সাক্ষাতকারে এই অভিযোগ করেন আইনজীবী শাহদিন মালিক।
“আমারতো মনে হয় দেশে কারো কোন সন্দেহ নাই যে পুলিশ তাদের ইচ্ছাকৃত ভাবে মেরে ফেলছে”। বলেন মি. মালিক।
মাদারীপুরে অভিযুক্ত জঙ্গি ফাহিম এক কলেজ শিক্ষককে হত্যার চেষ্টা চালানোর সময় হাতেনাতে ধরে ফেলেছিল প্রত্যক্ষদর্শীরা। মনে করা হচ্ছিল, তার কাছ থেকে ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড ও জঙ্গিবাদ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।
কিন্তু ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরুর চব্বিশ ঘণ্টার মাথায় সে কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হবার পর এ নিয়ে বাংলাদেশে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন রিমান্ডে থাকা অভিযুক্তকে নিয়ে অভিযানে যাওয়া প্রসঙ্গে।
তবে ঘটনার পর মাদারীপুরের পুলিশ প্রধান সরোয়ার হোসেন বিবিসিকে বলেছিলেন, ফাহিম তার সহযোগীদের নাম এবং আড্ডাস্থল বলেছিল এবং তাদের ধরতে ফাহিমকে নিয়েই পুলিশ অভিযানে গিয়েছিল। এসময় ফাহিমের ‘সহযোগীদের সাথে বন্দুকযুদ্ধে’ আহত হয়ে সে মারা যায়।
মি. মালিক বলেন, “২০০৪-০৫ সালে হয়তো কেউ কেউ ক্রসফায়ারের কিচ্ছা বিশ্বাস করতো, এখন কেউ এটা বিশ্বাস করে না”।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে যদি একটি সুষ্ঠু তদন্ত করা না হয় তাহলে এধরণের ঘটনা চলতেই থাকবে এবং পুলিশেরও আসল অপরাধীকে ধরার যোগ্যতা কমে যাবে।
বাংলাদেশে রিমান্ডে নির্যাতন রোধে ‘হেফাজতে নির্যাতন এবং মৃত্যু প্রতিরোধ আইন’ নামে একটি আইন থাকলেও প্রচারের অভাবে সেটি সম্পর্কে অনেকেই জানেন না।
“যেসব দেশে পুলিশ এই কাজগুলি করে, সেই প্রত্যেকটা দেশেই কিন্তু অপরাধের সমস্যার সমাধান হয় না। বরং সেই প্রত্যেকটা দেশই আস্তে আস্তে বর্বর ও সহিংস সমাজে পরিণত হয়”। কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনাগুলোর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন মি. মালিক।
পাঠকের মতামত: